বিধবা নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে অনৈতিক কাজের সময় উল্লাপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আজাদ হোসেন জনতার হাতে আটক হয়। গত সোমবার (২০ নভেম্বর) রাতে উপজেলার শিবপুর গ্রামের মৃত কালামের বিধবা স্ত্রীর বাড়িতে অনৈতিক কাজের সময় এ ঘটনা ঘটেছে।
আটকের পর সামাজিক মাধ্যম (ফেসবুকে) সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এঘটনার পর থেকেই সিরাজগঞ্জসহ উপজেলা জুড়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। পরে স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনি খেয়ে উপজেলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কাউন্সিলকে মারপিট করা হয়েছে। এঘটনায় কাউন্সিরের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করেছে।
অনৈতিক কাজের সময় স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া আজাদ হোসেন উল্লাপাড়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিরাজগঞ্জ জেলা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের আর.এস শাখার সভাপতি।
স্থানীয় লোকজন জানায়, বিধবা শাহিদার সাথে রাতে অনৈতিক সম্পর্কের আওয়ামীলীগ নেতা ও কাউন্সিলর আজাদ হোসেনকে ওই বাড়ির লোকজন হাতেনাতে ধরে তাকে অপদস্ত করে। তাৎক্ষনিক বাড়ির লোকজন বিষয়টি মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে। সেটি এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আওয়ামীলীগ নেতা ও কাউন্সিলকে খালি গাঁয়ে ধাওয়া করছে স্থানীয়রা। ধাওয়ার পরে স্থানীয়রা তাকে ধরে ফেলে।
পরে উপস্থিত নারী ও পুরুষরা জানতে চাইছেন, এরো রাতে এখানে কেন এসেছেন? এভাবে কেন আছেন?' অস্পষ্ট ভাষায় এর প্রতি উত্তরে কিছু একটা বলেন তিনি। এর প্রতি উত্তরে নারীরা উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকেন, আপনি এভাবে কথা বলতেছেন কেন? ভদ্র ভাষায় কথা বলেন। আপনার চরিত্র নিয়ে অনেক কিছু জানি আমরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, কাউন্সিল আজাদ একই উপজেলার মৃত কালাম হোসেনের স্ত্রী শাহিদার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকিয়া ও অনৈতিক কাজ করে আসছিলো। পরে তারা গোপনে দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক কাজ করে আসছিলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত (২০ নভেম্বর) রাতে তাকে ওই বাড়ি থেকে আটক করা হয়। পরে কাউন্সিলরের লোকজন এসে নিয়ে যায়।
উল্লাপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর আজাদ হোসেনের ৩টি স্ত্রী রয়েছে। এর পরেও লম্পট আজাদ ক্ষমতাশীন দলের নেতা হওয়ায় ক্ষমতার প্রভাবে অনেক নারীর জীবন ধ্বংস করেছে।
৭নং ওয়ার্ডবাসী জানিয়েছেন, একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে সে নিজেই যদি মা-বোনদের ইজ্জত লুটে নেয় তাহলে আমাদের কি? সরকারের উচিৎ এই লম্পট কমিশনার আজাদকে কাউন্সিলরের পদ থেকে বহিস্কার করে অতি দ্রুত তাকে আইনের আওতায় নেওয়ার জোড়দাবী জানিয়েছেন।
কাউন্সিল আজাদ হোসেন বলেন, নির্বাচনে পরাচিত প্রার্থীরা আমাকে ফাঁসানোর জন্য এই মিথ্যা কথা ছড়িয়েছে। আমাকে নিয়ে যে মিথ্যা করা বলা হয়েছে আমি তাদের বিরুদ্ধে আইনের মাধ্যমে তাদের বিচার প্রার্থনা করছি।
কাউন্সিলর আজাদ হোসেনের মেয়ের জামাই মনোয়ার হোসেন বলেন, রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে কাউন্সিলর সাহেবকে ফাঁসানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছে। এঘটনায় রিপোর্ট না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ করেন তিনি।
উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিল আজাদের বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে বিষয়টি তার ব্যক্তিগত। এঘটনায় পৌরসভা থেকে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।